ডেস্ক : ‘অর্থমন্ত্রীর আচরণে’র বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ করবেন ‘দেশের মালিক’ সাকির। মানসিকভাবে অসুস্থ সাকির রাজধানীর মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তিনি মানসিক রোগে ভুগছেন। মানবজমিন-এর সঙ্গে আলাপকালে সাকির জানান, আমি আমার টাকা চাইতে অর্থমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। আমি দেশের মালিক আমি জানবো আমার টাকা কার কাছে আছে। আমি তার কাছে অনেক টাকা দিয়ে রেখেছি। তাই আনতে গিয়েছিলাম। নিজের টাকা আনতে গেলাম আর আমাকে এই হাসপাতালে আইনা রাইখা দিছে। এখন আর কি বলবো। সত্যি কথা বললেই এমন হয়। আর কিছু বললেই আবার আমারে বাইন্দা রাইখা দিবো। এখানে না থাকলে আমার কি হবে। কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারিতে চলছে সাকিরের চিকিৎসা। মিডিয়াকর্মীদেরও তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। গত ২১শে ডিসেম্বর দুপুরে অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে আচমকা প্রবেশ করে নিজেকে ‘দেশের মালিক’ দাবি করেন সাকির। এদিন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেনের বৈঠক চলছিল। বৈঠক চলাকালে চেক রঙের শার্ট পরা, মুখে দাড়িওয়ালা সাকির মন্ত্রীর কক্ষের সামনে আসেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা এড়িয়ে ব্যক্তিটি অর্থমন্ত্রীর রুমের দরজা ঠেলে ভেতরে উঁকি দেন। এরপর ভেতরে বৈঠক চলতে দেখে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পর ফের ভেতরে উঁকি দিয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে অর্থমন্ত্রীকে ডাকতে থাকেন। এ সময় বৈঠক থেকে উঠে এসে অর্থমন্ত্রী সজোরে ধমক দেন। অর্থমন্ত্রী এ সময় ‘ইউ স্টুপিড, গেট লস্ট’ বলে তিনি নিজেই আবার দরজা আটকে দেন। ততক্ষণে লোকটি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। এমন অবস্থায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন লোকটিকে তাৎক্ষণিক আটক করে তখন সাকির জানান, ‘আমি দেশের মালিক। আমি সাধারণ কেউ না।’ কিভাবে সচিবালয়ে ঢুকলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাস লাগে না। আমি মন্ত্রীর কাছে এসেছি মেশিন নিতে। দেশের মালিকের মেশিনটি অর্থমন্ত্রীর কাছে। সেটি নিতে এসেছি!’ তিনি দেশের মালিক কিভাবে হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো হচ্ছে সব ট্যাক্সের ব্যাপার। দেশ তো হলো জনগণের। এক্ষেত্রে তাদের ট্যাক্সের টাকা দিতে হয়। যখন জনগণ ট্যাক্সের টাকা দিতে পারলো না তখন আমি দিয়ে দেশের মালিক হয়ে গেলাম। আর মালিক তো কোন কাজ করে না সে সবাইকে দিয়ে কাজ করায়। আমি তাই তাদের হাতে দায়িত্ব দিয়েছি আর তারা আমাকে পুলিশ দিয়ে মার দিলো। আমার নিজের হাতে গড়া দেশ। তিনি আরও বলেন- সারা পৃথিবী আমার, আমার যে কোন জায়গায় যাওয়ার অধিকার আছে। সেখানে যাবো। চিকিৎসাধীন সাকির তার পরিচয় দিয়ে বলেন, তার বাবার নাম সুন্দর আলী। বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদীতে। দেশের মালিক এখন কি করতে চান জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমি আবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই, জিজ্ঞেস করতে চাই তিনি কেন এমন করলেন। পাশেই বসে আছেন তার ছোট ভাই লোকমান হোসেন। তিনি জানান, প্রায় সাত বছর আগে থেকেই সাকির মানসিক ভাবে অসুস্থ। মাঝে মধ্যে এভাবে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। আবার নিজেই বাড়িতে ফিরে যান। সাকিরের বিষয়ে চিকিৎসকরা জানান- তিনি মানসিক ভাবে খুব বেশি বিপর্যস্ত। তাই এসব কথা বলছেন। আমরা তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। সেরে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
ليست هناك تعليقات:
إرسال تعليق